হোমনায় অসহযোগ আন্দোলনে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, গুলি; সাংবাদিকসহ আহত ৭
- আপডেট সময় : ০২:০০:৫১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ অগাস্ট ২০২৪ ৭৩ বার পড়া হয়েছে
কুমিল্লার হোমনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা ‘সরকারের পতন’ দাবিতে অসহযোগ আন্দোল কর্মসূচি চলছে। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল রবিবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত আন্দোলনকারীরা উপজেলা সদরের বিভিন্ন সড়কে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে। বিক্ষোভ চালাকালে থানার সামনের রাস্তায় পথচারীদের পার্ক করা দুটি মোটর সাইকেল, একটি প্রাইভেট কার, উপজেলা পরিষদের একটি গেট, পরিষদের চারটি সিসি ক্যামেরা এবং ইট পাটকেল ছুড়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তাবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ের কাচ ভাঙচূড় করে বিক্ষোভকারীরা। এ ঘটনায় স্থানীয় সাংবাদিকসহ অন্তত সাত জন আহত হয়েছেন।
বিক্ষোভ চলাকালে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। বেলা বারোটার দিকে থানার সামনে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কয়েক রাউন্ড সাউন্ড গ্রেনেড ও কয়েক রাউন্ড টিয়ার গ্যাস ছোড়ে। দুপুরে আবারও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় পুলিশের ছোড়া রাবার বুলেটে দায়িত্ব পালনকালে স্থানীয় দুই সাংবাাদিক আবু রায়হান চৌধুরী তার ডান হাত ও চোখের নিচে তিনটি ও সাইদুর রহমান তার ডান হাতে একটি রাবার বুলেটের আঘাতে, রাস্তা পার হতে গিয়ে এক শিক্ষক তাইজুল ইসলাম টিয়ার শেলের আঘাতে এবং ইট পাটকেলের আঘাতে বিক্ষোভকারীদের চার জনসহ মোট সাতজন আহত হন। তাদের কেউ কেউ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি চলে গেছেন।
এর আগে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও তরুণ-যুবকরা সকাল থেকে হোমনা ডিগ্রি কলেজে মাঠে জড়ো হয়। পরে সকাল এগারোটার দিকে সরকারবিরোধী নানা শ্লোগান দিতে দিতে তারা পুরাতন বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে জমায়েত হয়। সেখান থেকে শান্তিপূর্ণ মিছিল করার ঘোষণা দিয়ে বাজার হয়ে হোমনা-মুরাদনগর রোডে বিক্ষোভ করে। মিছিলটি থানার সামনের রাস্তা অতিক্রমকালে আন্দোলনকারীদের একটি অংশ থানা রোড পার করে চলে গেলেও মাঝখান থেকে কেউ কেউ পুলিশকে লক্ষ্য করে পানির বোতল ছোড়ে। তখন পুলিশ ধীরে ধীরে থানার ভেতরে চলে যায়। এসময় আন্দোলনকারীরাও থানার সামনে বিক্ষোভ কওে; এবং সেখানে পার্ক করা দুটি মোটর সাইকেল ও একটি প্রাইভেট কার ভাঙচূড় করে। তখন পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে কয়েক রাউন্ড সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেল ছোড়ে। টিয়ারশেলের ঝঁঝাঁলো আক্রমণে বিক্ষোভকারীদের কেউ কেউ সরে গেলেও তা মোকাবেলা করে বাকীরা অন্তত দুই ঘণ্টা সেখানে অবস্থান করে। বিক্ষোভাকারীরা কয়েকটি দলে বিভক্ত হয়ে কোনো দিকনির্দেশনাহীন বিক্ষিপ্তভাবে এ কর্মসূচি পালন করতে দেখা যায়। এদের একটি দল বাসস্ট্যান্ড এলাকায় হোমনা ঢাকা সড়কে বিদ্যুতের খুঁটিতে আগুন জ¦ালিয়ে সড়কে ব্যরিকেড সৃষ্টি করে। সেখান থেকে পুনরায় পুরাতন বাসসস্ট্যান্ডে ফিরে গিয়ে দুলাল স্মৃতি পরিষেদের কার্যালয় ভাঙচূড় করে।
এ ব্যাপারে হোমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, আন্দোলনকারীরা থানার সামনে বিক্ষোভ করেছে। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভাঙ্গ করতে পুলিশ কয়েক রাউন্ড রাবার বুলেট, টিয়ারশেল ও কয়েক রাউন্ড সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। কাউকে আটক করা হয়নি। মামলা হবে।
উপজেলা পরিষদের গেট, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় ও সিসি ক্যামেরা ভাঙচূড় সম্পর্কে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ক্ষেমালিকা চাকমা বলেন, এখনও ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি। তবে প্রাথমিকভাবে চারটি সিসি ক্যামেরা, পরিষদের পূর্ব প্রান্তের একটি গেট ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ের কাচ ভাঙচূড় করেছে বিক্ষোভকারীরা।